বঙ্গভবনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম বৈঠকে দলীয় চেয়ারম্যান জাতির জনক রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ
আজকে প্রথম দিন আমরা এখানে বসেছি সকলের সঙ্গে দেখাশোনা করবার জন্য, যাকে বলা হয় গেট টুগেদার। যাতে আমরা মেম্বার যারা রয়েছি, সকলে একসঙ্গে বসতে চাই, সকলকে যেন চেনা যায়, আলোচনা করা যায় এবং জানা যায়, কী অবস্থা।
শিগগিরই অ্যাসেম্বলী সেশন হবে। বাজেট সেশন। আগস্ট মাসে সেন্ট্রাল কমিটির বৈঠক বসবে। একদিন দু’দিনের জন্য নয়, দরকার হলে পাঁচ-সাত দিনের জন্য বসবে। এবং সেই সেন্ট্রাল কমিটির মিটিংয়ে বিভিন্ন এজেন্ডা দেওয়া হবে। সেই এজেন্ডা অনুযায়ী কনফারেন্সকে ভাগ করে কতগুলো সাব কমিটি বা কমিশন করে দেওয়া হবে। বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট এবং বাইরের কাউকে যদি দরকার হয় তাঁদের নিয়ে বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করে একটি প্রপোজাল সাবমিট হবে কনফারেন্সের কাছে। যেমন ফু এগ্রিকালচার, ইন্ডাস্ট্রি, ফ্লাড কন্ট্রোল এডুকেশন ইত্যাদি। বিভিন্ন সাবজেক্টের সাব-কমিটি করে তাদের কাছে ভার দেওয়া হবে। রেসপেরিত মিনিস্টার সেখানে থাকবেন। সরকারি কর্মচারীরা থাকবেন। যদি দরকার হয় বাহির থেকে যারা আমাদের কমিটি মেম্বার নন, কিন্তু যাঁরা কন্ট্রিবিউট করতে পারেন, তাদের আমরা ইনভাইট করতে পারব। সেখানে বসে কতটুকু কী করা হয়েছে, কতটা ভুল হয়েছে কী ত্রুটি হয়েছে বা কী কাঁ করলে আমরা দেশের ইম্প্রুভমেন্ট করতে পারব, সে সম্পর্কে সাজেশন দিলে তখন সেন্ট্রাল কমিটি থেকে এটা প্রস্তাব করে গভর্নমেন্ট সেই অনুযায়ী তাঁদের কাজকর্ম করবেন। এই আমাদের ইচ্ছে। আগস্ট মাসে একটা ফুল এজেন্ডা নিয়ে কাজ শুরু করা।
নতুন পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা
আপনাদের কাছে বক্তৃতা করে বোঝানো দরকার নেই। তবে এটুকু বলতে পারি, কেন আমরা এ নতুন পদ্ধতি সৃষ্টি করলাম আর কেনই বা আমরা বিপ্লব বললাম। সেদিন ডক্টর এনামুল হক সাহেবের একটা লেখা পড়লাম। তিনি বলেছেন যে, বাংলাদেশ যে স্বাধীন হয় নাই, সেকথা সত্য নয়। বাংলাদেশ অনেকবার স্বাধীন হয়েছে, কিন্তু স্বাধীনতা রাখতে পারে নাই। বিদেশিদের ডেকে আনতে হয়েছে, ডেকে এনেছে এই বাঙালিরাই। কথাটা আমার মনে লাগল। কিন্তু আমি তো তাঁর মতো শিক্ষিত নই। তিনি তো আমার চেয়ে অনেক গুণীজন, গুরুজন। তাঁকে আজও ভক্তি করি আমি। আমি যা চিন্তা করতাম বা ইতিহাসে যা পড়েছি, তার তাঁর কথা পড়ে আমি কনফার্ম করলাম। আজকে স্বাধীনতার পরে বিনা কারণে এইভাবে সিটেম চেঞ্জ করি নাই। বাংলাদেশে নির্বাচন দিয়েই ৯৭ পারসেন্ট ভোট আউট অব থ্রি হানড্রেট ফিফটিন, থ্রি হানড্রেট সেভেন সিটস আমাদের পার্টি আওয়ামী লীগের ছিল। যদি তার পরেও ইলেকশন দিতাম, এখনও বিশ্বাস করি, দুই এক পারসেন্ট বাদ যেতেও পারে, কিন্তু নব্বই পারসেন্ট-এর কম পাবে না আমাদের পার্টি। সেজন্যই এই সিস্টেমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার সম্ভাবনা আমাদের অনেক দিন ছিল না, যদি ক্ষমতায় থাকতে চাইতাম। আর, ক্ষমতার জন্য রাজনীতি যদি করতাম, তাহলে আমরা অনেকবারই ক্ষমতায় আসতে পারতাম। যদি নিগোশিয়েশন বা আপোসে আমরা ক্ষমতা চাইতাম, তাহলে কেন আমরা এই পরিবর্তন করলাম?
আজ দুনিয়ার দিকে আমাদের চাইতে হবে । স্বাধীনতার পর আমাদের কী কী দশা হলো? ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আমরা স্বাধীনতা পেলাম এবং রক্তের বিনিময়ে পেলাম। সাড়ে সাত কোটি লোক, ৫৪ হাজার স্কোয়ার মাইল। সম্পদ বলতে কোনো পদার্থ আমাদের ছিল না। সমস্ত কিছু ধ্বংস। আমরা কিন্তু চেষ্টা করলাম যে, ঠিক আছে। আমরা একদম যাকে বলে ফ্রি হ্যান্ড দিয়ে দিলাম। আচ্ছা বলো, আচ্ছা করো, আচ্ছা দল গড়ো, আচ্ছা লেখো, আচ্ছা বক্তৃতা করো বাধা নাই, ফ্রি হ্যান্ড।
আমাদের অনেক পুরানো নেতৃবৃন্দ আছেন, আমার মনে পড়ে না যে, দশ-বিশ বছরের মধ্যে তাঁদের কেউ পল্টন ময়দানে দাঁড়িয়ে শেখ মুজিবুর রহমানকে গালাগালি না করে ফিরে গেছেন। এ আমার জানা নাই বিশ পঁচিশ বছরের মধ্যে। কিন্তু তাও বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে বললাম, যদি কিছু ভালো কথা বলতে চাও, বলো। যদি দেশের মঙ্গল হয়, বলো । কিন্তু দেখতে পেলাম কী? আমরা যখন এই পন্থায় এগুতে শুরু করলাম, বিদেশি চক্র এ দেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠল। তারা এদেশের স্বাধীনতা বানচাল করবার জন্য ষড়যন্ত্র শুরু করল এবং ফ্রি স্টাইল শুরু হয়ে গেল। হুড় হুড় করে বাংলাদেশে অর্থ আসতে আরম্ভ করল। দেশের মধ্যে শুরু হলো ধ্বংস – একটা ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ।
এছাড়াও আরও দেখা গেল, যাদের আমরা এ সমস্ত ভোগ করতে দিলাম, তারা রাতের অন্ধকারে মানুষ হত্যা করতে আরম্ভ করল। আমরা বলেছি যে, বাবা, ঠিক আছে, পাঁচ বছর পরে ইলেকশন হবে, ইলেকশন কর, ইলেকশনে যদি ডিফিট খাই, আর একজন এসে বসবে। হাইকোর্টের একজন এক্স-জাজ আমাদের ইদরিস সাহেবকে ইলেকশন কমিশনার করা হয়েছিল। তাঁকে আমি ইলেকশনের ব্যাপারে বলেছি, কোনো কথা নাই । যা ভালো বুঝবেন, তাই করবেন আপনি ফ্রি, ফেয়ার ইলেকশন হবে! তারপরও যারা ইলেকটেড মেম্বার অব পার্লামেন্ট, রাতের অন্ধকারে তাঁদের হত্যা করা হলো! যারা স্বাধীনতা সংগ্রামে যুদ্ধ করেছেন, দেশ ত্যাগ করেছেন, ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে যাদের সম্পত্তি, তাঁদের রাতের অন্ধকারে হত্যা করা হলো। মোট কয়েক হাজার কর্মীকে হত্যা করা হলো। যারা নিঃস্বার্থভাবে যুদ্ধ করেছে, মুক্তিবাহিনীর ছেলে, তাঁদের হত্যা করা হলো। এত অস্ত্র উদ্ধার করি তবু অস্ত্র শেষ হয় না। এই রাজনীতির নামে হাইজ্যাক, এই রাজনীতির নামে ডাকাতি, টেলিফোন করে মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় বা মানুষের বাড়িতে গিয়ে গহনা কেড়ে নেয়। রাজনীতির নামে একটা ফ্রি স্টাইল শুরু হয়ে গেল।
নব্য, কিছুদিন আগে স্বাধীনতাপ্রাপ্ত একটা দেশে এই অবস্থা চলতে দেয়া যায় না। পিপল-এর মধ্যে যে ডিমোরালাইজিং ইফেক্ট হয় তার ফল খুব খারাপ হয়। আমরা জানি, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়৷ আমরা জানি, বন্যা হয়েছে, এক কোটি লোক চলে গিয়েছিল, তারা ফিরে এসেছে, তাদের রিহ্যাবিলিটেশন দরকার। ওয়ার্ল্ড ইনফ্লেশন, যা আমার হাতে আপনার হাতে নয়। জিনিসের দাম বেড়ে গেল। ড্রাউট হলো বাংলাদেশে, এই সাউথ-ইস্ট এশিয়াতে। ফ্লাড এল। সাড়ে সাত কোটি লোক, ২০০ বছরের গোলামী, অর্থনৈতিক কাঠামো নাই। সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট বলে কোনো গভর্নমেন্ট নাই, সব কিছু রয়েছে ইসলামাবাদে। একটা প্রভিন্সিয়াল গভর্নমেন্ট ছিল ছোটখাটো। তাও নয় মাসে আর্মি কন্ট্রোলে নিয়ে নিল। তাদের স্ট্রাকচার ধ্বংস করে দিল। নাই একটা ফরেন অফিস, নাই একটা প্ল্যানিং অফিস, নাই একটা কোনো কিছু। আমাদের সব কিছু আরম্ভ করতে হয়েছিল গোড়া থেকে। এই সুযোগে আমাদের যারা স্বাধীনতার নামে অনেক চেষ্টা করেছিল, নিজেদের একটা বেস করা যায় কি-না, ভবিষ্যতে তাদের স্টজরা এদেশের সরকার চালাতে পারে কি-না, তারা তার ফিকির খুঁজতে লাগল। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে এবং আগে যে পলিসি আমরা নিয়েছি- বৈদেশিক নীতি- বাংলাদেশের মানুষ, শিক্ষিত সমাজ এবং দুনিয়া এটা এ্যাপ্রিশিয়েট করেছে।
স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি
আমরা নন-অ্যালায়েন্ড,আমরা ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফরেন পলিসিতে বিশ্বাস করি, আমরা পিসফুল কো-এক্সিসটেনস-এ বিশ্বাস করি। আমরা দুনিয়ার নির্যাতিত পিপল-এর সাথে আছি, আমরা কারো সাথে শত্রুতা করতে চাই না। আমরা সকলের সাথে বন্ধুত্ব করতে চাই। আমরা আন্ডারডেভেলপড কান্ট্রি, আমরা বিশ্বে শান্তি চাই। আমরা কারো ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। আমাদের ব্যাপারেও কেউ হস্তক্ষেপ করুক, এটা আমরা চাই না। আমরা দেশকে গড়তে চাই, আমরা সকলের শান্তি চাই, আমাদের লোেক বাঁচতে চায়। এই পলিসি সকলেই প্রায় হোল ওয়ার্ল্ড পছন্দ করল। আমার দেশবাসী এতে সমর্থন জানাল। আমরা মনে করি, আমাদের বৈদেশিক নীতি সম্পূর্ণরূপে সাক্সেসফুল।
হয়েছে। আজ আমরা নন অ্যালায়েন্ড কান্ট্রিতে আছি, আজ আমরা ইসলামিক সামিট-এ আছি, আজ আমরা কমনওয়েলথ-এ আছি, আজ আমরা ইউএনও-তে আছে। ইউএনও’র চার্টারে বিশ্বাস করি। আমরা সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাই। ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্স-এ আমাদের প্রয়োজন নাই। এতে আমাদের কোনো স্বার্থ নেই। যেখানে কোনো অপ্রেড ইন্টারন্যাশনাল পিপল থাকবে, আমরা তাদের মোর্যাল সমর্থন দিতে পারি এবং দেব। যেখানেই থাকুক না কেন, আমরা দেব। আমরাও অপ্রেড পিপল। আমরাও যুগ যুগ করে এটার সঙ্গে পরিচিত ছিলাম। আমরা মারও খেয়েছি। দুনিয়ার শোষকগোষ্ঠী, ইম্পিরিয়ালিস্ট পাওয়ার আমাদের সম্পদ লুট করে নিয়েছে। আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। আমাদের স্বজন হারানোর অর্থ কী? এর অর্থ হলো, আমাদের অর্থনীতির মালিক আমরা এবং আমাদের দেশ সেই সম্পদ ভোগ করবে।
পাকিস্তানের কার্যকলাপ
পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব করবার জন্য আমরা চেষ্টা করেছি। আমরা এত রক্ত দিয়েছি, এত আমরা আঘাত পেয়েছি, এত আমাদের ইনটেলেকচুয়ালকে হত্যা করা হয়েছে, মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, আমাদের রাস্তাঘাট ধ্বংস করা হয়েছে, তবুও আমরা বলেছি, আমরা সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। ১৯৫ জন, যারা কমিটেড ক্রাইম এগেইনস্ট হিউম্যানিটি, তাদের পর্যন্ত আমরা মাফ করে দিলাম। উদ্দেশ্য এই ছিল যে, আমরা এদেশে সাইথ-ইস্ট এশিয়া, পারটিকুলারলি সাব-কন্টিনেন্টে একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করে এদেশে ডেভেলপমেন্টের কাজ করব। আমাদের অ্যাটেনশান থাকবে মানুষের মঙ্গল করা, দেশকে গড়া। কিন্তু পাকিস্তান, দুঃখের বিষয়, একটা পয়সা পর্যন্ত দিল না। আমরা ছিলাম ৫৬ পারসেন্ট পপুলেশান, কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো সম্পদ আমাদের দিল না। ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ আমাদের দিল না। গোল্ড রিজার্ভ আমাদের দিল না। আমাদের কোনো একটা জাহাজ দিল না। কোনো কিছুই তারা আমাদের দিল না। আমরা আমাদের দিক দিয়ে শত চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তারা এগিয়ে এল না। দ্যাটস অল রাইট। মাটি আছে, মানুষ আছে, দেশ আছে ইনশাল্লাহ। কষ্ট হয়েছে। আমার মানুষের, না খেয়ে মরেছে, সত্য কথা। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে যে সম্পদ আছে, যদি গড়তে পারি, অনেস্টলি কাজ করতে পারি, তাহলে বাংলাদেশের কষ্ট একদিন দূর হয়ে যাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আমরা চেষ্টা করেছিলাম, আমরা এখন পর্যন্ত চেষ্টা করছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তারা এগুচ্ছে না।
কারো সঙ্গে দুশমনি নাই। চায়না রেকগনিশন দিল না। কিন্তু আমরা চায়নার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। তারা একটা বিগ কান্ট্রি। আমরা এখনও বন্ধুত্ব চাই। আমার সঙ্গে বন্ধুত্ব আছে রাশিয়ার, আমার বন্ধুত্ব আছে ভারতবর্ষের সঙ্গে, আমার বন্ধুত্ব আমেরিকার সঙ্গে। এ বন্ধুত্ব সকলের সঙ্গে চাই। আমরা কারও সঙ্গে গোলমাল করতে চাই না। কারণ, আমি আমার দেশকে গড়তে চাই।
বিদেশের সাহায্যে চক্রান্ত
এই পলিসিতে আজ পর্যন্ত আমরা এগিয়ে চলেছি। কিন্তু দেশের মধ্যে এজেন্সি শুরু হয়ে গেল। বহুদিন রাজনীতি করেছি। ১৮ বছর বয়স থেকে । তখন বোধ হয় ১৯৩৮ সন। তারপর চোঙ্গা মুখে দিয়ে রাজনীতি করেছি, রাস্তায় হেঁটেছি, পায়ে হেঁটেছি, ফুটপাতে ঘুমিয়েছি। সেই রাজনীতি থেকে আজ এ পর্যন্ত এসেছি। আমি বলতে চাই না যে, আমি সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছি। সাধারণ মানুষ থেকে আমি চোঙ্গা ফুঁকেছি, সাইকেলে ঘুরেছি, গ্রামে গ্রামে ঘুরে রাজনীতি করেছি। আমি জানি, একটা খবরের কাগজ চলতে পারে না, যদি অ্যাডভারটাইজমেন্ট না পায়। বৎসরের পর বৎসর এই টাকা কোনো পলিটিক্যাল পার্টি ব্যয় করতে পারে বলে আমার জানা নাই। আর আমি হলাম বিগেস্ট পলিটিক্যাল পার্টি লিডার। আমি দেশে একটা পার্টি গড়ে তুলেছি এবং চালিয়েছি যেটা নাম্বার ওয়ান পলিটিক্যাল পার্টি অব বাংলাদেশ, কিন্তু আমি একটা ডেইলি কাগজ চালাতে পারি না। অর্ধেকভাগ করেন তার মানিক ভাই। বরং মানিক ভাইয়ের অ্যাবিলিটি এবং এক্সপেরিয়েন্স ছিল, ইত্তেফাক কাগজ চালাতেন তিনি। তা থেকে আমাদের সমর্থন করতেন। অথচ এই তিন বছরের মধ্যে দেখা গেল, এমন কাগজও চলল, যে কাগজ বছরে এক ইঞ্চি অ্যাডভারটাইজমেন্ট পায় নাই। কিন্তু একটা কাগজ করতে মাসে কমপক্ষে এক লক্ষ, সোয়া লক্ষ, দেড় লক্ষ টাকা খরচ হয়। আজকে এই টাকা তারা কোথা থেকে পায়? কে দেয় তাদের এই টাকা? কোথা থেকে আসে? তারগর ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট বলতে যে পদার্থ বাংলাদেশে আছে, তাদের এত টাকা আছে বলে আমার জানা নাই। ছিল কি-না, তাও জানি না। এখন কিছু লোক নতুন টাকার মানুষ হয়েছে। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রি তো আমরা নিয়ে নিলাম। দেখা গেল যে, বিদেশের কিছু কিছু জায়গা থেকে পয়সা পেয়ে তারা দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, গোলমাল সৃষ্টি করে।
একতাই মঙ্গলের পথ
দ্বিতীয় কথা হলো, আমরা এই সিস্টেম ইন্ট্রোডিউস করলাম কেন? এই যে আমাদের সমাজ এখানে দেখতে পাই- আমি অনেক চিন্তা করেছি, বহুদিন কারাগারে একলা একলা বসে বসে চিন্তা করতে আমি সময় পেয়েছি, এইসব বিষয়ে যে, আমার দেশে ২০% লোক শিক্ষিত। তার মধ্যে আমরা ১০% বা ৫% লোেক লেখাপড়া কিছুটা জানি। এর মধ্যে এক গ্রুপ আমরা পলিটিশিয়ান হয়ে গেলাম। এক গ্রুপ আমরা বুদ্ধিজীবী। এক গ্রুণ স্কুল টিচার, যারা এই ঘোরপাচের মধ্যে আসতে চায় না। এক গ্রুপ সরকারি কর্মচারী হয়ে গেলাম। কেউ ডাক্তার হয়ে গেলাম, কেউ ইঞ্জিনিয়ার হয়ে গেলাম, কেউ অমুক হয়ে গেলাম। আর কিছুসংখ্যক থেকে গেলাম রাজনীতিবিদ। কিন্তু অ্যাকচুয়াল যেটা পিপল, তাদেরসহ সবাইকে একতাবদ্ধ করতে না পারলে সমাজের দুর্দিনে দেশের মঙ্গল হতে পারে না। সেজন্য আমরা চিন্তা করলাম, সমাজের যেখানে যিনি আছেন, তিনি বুদ্ধিজীবী হন, ডাক্তার হন, ইঞ্জিনিয়ার হন, সরকারি কর্মচারী হন, রাজনীতিবিদ হন, ল-ইয়ার হন, আর যাই হন– কারণ, আমার সমাজে তো শতকরা ২০ জনের বেশি শিক্ষিত নন- এদের মধ্যে সমস্ত লোককে একতাবদ্ধ করে দেশের মঙ্গলের জন্য যদি এগিয়ে যেতে না পারি, তবে দেশের মঙ্গল করা কষ্টকর হবে। সেজন্য নতুন সিস্টেমের কথা বহুদিন পর্যন্ত চিন্তা করেছি। আমার মনে হয়, বাংলাদেশবাসী এটাকে গ্রহণ করেছে। এবং ভালোভাবে গ্রহণ করেছে।
নতুন পদ্ধতির লক্ষ্য
আর একটা জিনিস আমি মার্ক করলাম। সেটা হলো এই যে, একদল বলে, আমরা পলিটিশিয়ান, একদল বলে আমরা ব্যুরোক্রেট। তাদের অ্যাটিচিউড হলো হাউ টু ডিসক্রেটিড দি পলিটিশিয়ান পলিটিশিয়ানরা তাদের স্ট্রেংপ দেখাবার জন্য বলত যে, অল রাইট, গেট আউট। এনিয়ে সমস্ত দেশ একটা ভাগ ভাগ অবস্থার মধ্যে থাকত। এই সন্দেহটা দূর করার দরকার এবং দূর করে সকলেই যে এক এবং সকলেই যে দেশকে ভালোবাসো এবং মঙ্গল চায় এটা প্রমাণ করতে হবে। আমার সমাজে যে সমস্ত জী লোক আছেন ও অন্য ধরনের যত লোক আছেন তাঁদের নিয়ে আমার একটা পুল করা দরকার। এই পুল আমি করতে পারি, যদি আমি নতুন সিস্টেম চালু করি এবং একটা নতুন দল সৃষ্টি করি- জাতীয় দল, যার মধ্যে এক মত, এক পথ, এক ভাব এক হয়ে দেশকে ভালোবাসা যায়। যারা বাংলাদেশকে ভালোবাসে, তারা এসে একতাবদ্ধ হয়ে দেশের মঙ্গলের জন্য কাজ করে যেতে পারে। এজন্য আজকে এটা করতে হয়েছে।
আর দ্বিতীয়ত, পয়সাকড়ি খরচ করে অন্য ধরনের রাজনীতি করা যায়। কিন্তু আমি যেটা বলেছি শোষিতের গণতন্ত্র, কেন বলেছি? শোষিতের গণতন্ত্র এজন্য বলেছি যে, আজকে বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসে মানুষ। বঙ্গবন্ধু বলে দিয়েছে, অল রাইট, যাও তুমি যেয়ে কনটেস্ট কর। আমি যেয়ে কিছু বক্তৃতা করে দিয়ে এলাম, যাও পছন্দ হয় না, কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলেছেন, আর করব কি, ভোটটা দিয়ে দিলাম। এ-ও হয়েছে অনেক জায়গায় হয়। কাজেই সেজন্য সিস্টেম চেঞ্জ করে বলেছি যে, কল্পটিট্যুয়েন্সিতে চারজন কি তিনজন কি দুইজন লোক আছে, তাদের সম্বন্ধে সকলকে বলে দেওয়া হলো, এই তিনজন কি দুইজন লোক আছে, তাদের সম্বন্ধে সকলকে বলে দেওয়া হলো, এই তিনজন-চারজন পার্টির লোক আছে, তাদের মধ্যে যাকে আপনারা পছন্দ করেন, ভোট দিন। ফলে জনগণ সুযোগ পেল অ্যাকর্ডিং টু দেয়ার ওন চয়েস ভালো লোককে পাঠাবার জন্য। না হলে আমরা অনেক সময় ‘জিন্দাবাদ’ ‘মুর্দাবাদ’ দিয়ে পাস করে নিয়ে আসি। তাতে দেখা গেছে যে, সত্যিকারের ভালো লোক অনেক সময় নাও আসতে পারে। কিন্তু সত্যিকারের ভালো লোক আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি। সেজন্য এই সিস্টেম করা হয়েছে।
তৃতীয়ত, জাতীয় ঐক্য, যেটা বলেছি আমি, জাতীয় ঐক্য আমরা করতে পারব। যারা দেশকে ভালোবাসে না, দেশের সঙ্গে বেইমানি করেছিল, তাদের সকলকে আমরা ক্ষমা করলাম। স্বাধীনতার সঙ্গে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করল, বেইমানি করল, রাজাকার হলো, তাদেরও আমরা ক্ষমা করে দিলাম। অন্য দেশে বিপ্লবের পরে এভাবে ক্ষমা করে নাই। একেবারে নির্মূল করে দিয়েছে। কিন্তু আমরা ক্ষমা করলাম। বললাম যে, ঠিক আছে, তওবা কর, আল্লাহ তোমাদের ঈমান দিক তোমরা দেশের কাজ কর। কিন্তু চোরা না শুনে ধর্মের কাহিনী। তাদের মধ্যে একটা গ্রুপ সেই শত্রু যে শত্রু আমাদের এখানে ম্যাসাকার করল, তাদের মাধ্যমে লন্ডনে বসে অর্থ খরচ করে বাংলাদেশের মধ্যে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করতে আরম্ভ করল। তাদের কী অধিকার আছে বাংলাদেশের রাজনীতি করবার? ক্ষমা করতে পারি।
ডিভিশন হবে ষাটটি জেলা। প্রত্যেক জেলার জন্য একজন গভর্নর থাকবেন। সেখানে ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। তাঁর অধীন এসপি থাকবেন। দলের প্রতিনিধিগণ থাকবেন সংসদ সদস্যরা থাকবেন, জনগণের প্রতিনিধিরা থাকবেন। কাউন্সিলে সরকারি কর্মচারীরাও থাকবেন। প্রত্যেক জেলায় অর্থাৎ বর্তমান মহকুমাসমূহে একটি করে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাউন্সিল থাকবে এবং তার একজন গভর্নর থাকবেন। তিনি স্থানীয়ভাবে শাসন ব্যবস্থা চালাবেন।
শাসন ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে। জেলা গভর্নরের কাছে যাবে আমার ওয়ার্কস প্রোগ্রামের টাকা। তাঁর কাছে যাবে আমার খাদ্য-সামগ্রী। তাঁর কাছে যাবে আমার টেস্ট রিলিফ, লোন, বিল ও সেচ প্রকল্পের টাকা। কেন্দ্রীয় প্রশাসনের ডাইরেক্ট কন্ট্রোলে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাউন্সিল ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন পরিচালনা করবে। তবে?, ব্রিটিশ আমলারা বলে গেছেন,সাবডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট থাকতে হবে- এসডিও সাহেব যা করবেন, সেটাই হবে ফাইনাল কথা। সিও সাহেব শাসন করবেন থানায় বসে সেই অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রাখতে হবে? এতে দেশের মঙ্গল হবে না। কারণ, আমি যে টাকা দেব একটা থানায়, সেই টাকা দেব সিও সাহেবকে। এনি পলিটিক্যাল ওয়ার্কার ইজ বেটার দ্যান এনি সিও ইফ দি পলিটিক্যাল ওয়ার্কার ইজ সিনসিয়ার। অন্যথায় ক্যাশের টাকা সেখান থেকে লুট হয়ে যাবে।
আমি অর্ডার দিয়েছি, আজকে অর্ডার হয়ে গেছে। ১৫ জুলাই থেকে এই ৬০ জন গভর্নরকে ট্রেনিং দেওয়া হবে। ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডিস্ট্রিক্ট হয়ে যাবে। এক বছরের মধ্যে থানা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাউন্সিল করতে হবে। সেখানে বাকশালের রিপ্রেজেন্টেটিভ থাকবে, কৃষকের রিপ্রেজেনটেটিভ থাকবে, শ্রমিকের থাকবে, যুবকের থাকবে, মহিলাদের থাকবে। একজন গভর্নর থাকবেন, যিনি হবেন হেড অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। সেখানে মেম্বার অব পার্লামেন্ট গভর্নর হতে পারেন। সেখানে পার্লামেন্টের মেম্বর নন এমন পলিটিক্যাল ওয়ার্কার হতে পারেন। সেখানে সরকারি কর্মচারী, যাকে বিশ্বাস করি তিনিও হতে পারেন। আবার নাক উঁচু করা চলবে না। পার্টির মেম্বার হওয়ার পরে দে উইল টেক রেসপনসিবিলিটিজ অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন।
সোজাসুজি কাজ চালাতে হবে
এই তো গেল এক দিক; তবে আমি কাজ বাড়িয়ে দিয়েছি আইনমন্ত্রীর। আমি অর্ডারগুলো করে দিয়েছি; কিন্তু তাঁর জান শেষ মানে এইগুলো করতে তাঁর জান শেষ হয়ে যাবে। বুঝেছি, শুনে মুখ কালো করে ফেলেছেন। অর্ডার আমি দিয়ে দিয়েছি, আইন তাঁর বদলাতে হবে। আইন টাইন আমি বুঝি না। আমি বলেছি, আজ করে যান, যা কিছু দরকার হয়। এই অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, তারপর আমাদের সেক্রেটারিয়েট, সব ভাঙতে হবে। এসব চলতে পারে না। আই অ্যাম গোয়িং ফর দ্যাট। টাকা নাই, পয়সা নাই, খাবার নাই, এটা নাই, ওটা নাই। সব ভাঙতে হবে। ডাবল ট্রিপল, অ্যান্ড দ্যাট। এক এক নোট লিখে নিয়ে আসে। আমি বলেছি, এস্টাবলিশমেন্টের সাহেবরা আছেন। এখান থেকে আরম্ভ। পরে সেকশন অফিসার, তারপর ডেপুটি সেক্রেটারি, সেক্রেটারি তারপর আসে আমার কাছে । এইটুকু নোট । ঐটুকু ফাঁক তা সত্ত্বেও।
এসবের প্রয়োজন নেই, সোজাসুজি কাম চালান। কর্পোরেশন করেছি। অলরেডি দুইটি কর্পোরেশন করে ফেলেছি। এভরি কর্পোরেশন ডাইরেক্টলি আন্ডার দি মিনিস্টার থাকবে। লেট দি মিনিস্টার গেট ওয়ার্ক ফ্রম জয়েন্ট সেক্রেটারি। ব্রিটিশ আমলের সেই ঘুণে ধরা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সিস্টেম দিয়ে বাংলার মানুষের মঙ্গল হতে পারে না। ইট মাস্ট গো। সেই জন্য আমূল পরিবর্তন দরকার হয়ে পড়েছে। দ্যাট ইজ অলসো এ রেভল্যুশন।
আত্মসমালোচনা চাই
আজকে এই যে, নতুন এবং পুরানো যে সিস্টেম এ আমাদের দেশ চলছে, এর জন্য আমাদের আত্মসমালোচনার প্রয়োজন আছে। আত্মসমালোচনা না করলে আত্মশুদ্ধি করা যায় না। আমরা ভুল করেছিলাম। আমাদের বলতে হয় যে, ভুল করেছি। আমি যদি ভুল করে না শিখি, ভুল করে শিখব না। সে জন্য আমি সবই ভুল করলে আর সকলই খারাপ কাজ করবে, তা হতে পারে না। আমি ভুল নিশ্চয়ই করব, আমি ফেরেশতা নই, শয়তানও নই। আমি মানুষ, আমি ভুল করবই। আমি ভুল করলে আমার মন থাকতে হবে, আই ক্যান রেকটিফাই মাইসেল্ফ। আমি যদি রেকটিফাই করতে পারি, সেখানেই আমার বাহাদুরি। আর যদি গো ধরে বসে থাকি যে না, আমি যেটা করেছি, সেটাই ভালো, দ্যাট ক্যানট বি হিউম্যান বিইং। ফেরেশতা হইনি যে সব কিছু ভালো হবে। হতে পারে, ভালো হতে পারে। উই উইল রেকটিফাই ইট। এই সিস্টেম ইনট্রোডিউস করে যদি দেখা পায় যে, খারাপ হচ্ছে, অল রাইট, রেকটিফাই ইট। কেননা, আমার মানুষকে বাঁচাতে হবে। আমার বাংলাদেশে শোষণহীন সমাজ গড়তে হবে। আমরা নতুন ল্যান্ড সিস্টেম-এ আসতে চাচ্ছি, আমরা কো-অপারেটিভ-এ আসতে চাচ্ছি। দিজ ইউনিয়ন কাউন্সিল ওল্ড ব্রিটিশ ইউনিয়ন কাউন্সিল। যেখানে যা দেওয়া হয়, অর্ধেক থাকে না, সঙ্গে সঙ্গে সাফ। সেজন্য একমাত্র উপায় আছে যে আমরা যে আজকে মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ চালু করতে চাচ্ছি। এটা যদি গ্রো করতে পারি আস্তে আস্তে এবং তাকে যদি আমরা ডিসট্রিক্ট এবং থানা কাউন্সিলের মাধ্যমে নিয়ে আসতে পারি, তাহলে দেশের মঙ্গল হতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি।
এজন্য ডেডিকেটেড ওয়ার্কারের দরকার। এটা উইদাউট ডেডিকেটেড ওয়ার্কার হতে পারে না। সেই জন্য আজকে আমি চাচ্ছি, আর্মির মধ্যে হোক, নেভীর মধ্যে হোক, এয়ারফোর্স-এর মধ্যে হোক, বিডিআর-এর মধ্যে হোক, রক্ষীবাহিনী হোক, পুলিশ হোক, সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন হোক, পলিটিশিয়ান হোক, যেখানেই হোক ভালো লোক যেখানে আছে, তাঁদের এক জায়গায় করে কাজে লাগতে হবে। যাও ওখানে বসো, কাজ করে নিয়ে এসো। আর্মির তো দরকার নাই। খালি খালি বসে আমির অত পয়সা খরচ করার তো দরকার নাই। আই ওয়ান্ট মাই আমি- এ পিপলস আর্মি। আই ডু নট ওয়ান্ট মাই আর্মি টু ফাইট এগেইনস্ট এনিবডি। বাট আই ওয়ান্ট মাই আমি টু ডিফেন্ট মাইসেল্ফ এন্ড দ্যাট দি সেম টাইম টু ওয়ার্ক।
সকল কাজই সকলের
আর একটা ফ্যাশান আছে আমাদের এই কাজটা তো ফুড ডিপার্টমেন্টের, এটা তো এগ্রিকালচারের, আমার তো না, এটা তো ইরিগেশনের, আমার তো না। ডিস্ট্রিক্ট, সাবডিভিশনে সব জায়গাতে হয় কী? একজন আপনার বড় অফিসার। আমরা যখন কোথাও যাব, দেখব যে, রাস্তায় একটা ইট পড়ে আছে, ঐটা আমাদের ডিপার্টমেন্টের না, একথা বলে পাশ কাটিয়ে চলে গেলাম। হোয়াট ইজ দিস? দিস মেন্টালিটি মাস্ট বি চেঞ্জড। প্রত্যেকটি লোক, প্রত্যেকটি কাজই আমার মাটি কাটা আমার কাজ, ফ্যাক্টরিও আমার কাজ, রাস্তা বানানোও আমার কাজ। আমি একটা হাই অফিসিয়াল, আমি একটা পলিটিশিয়ান, আমি একটা পলিটিক্যাল ওয়ার্কার, আমি একটা এমপি, আমি দেশের একটা কর্মচারী, একজন পুলিশ অফিসার, আই হ্যাভ মাই রেসপনসিবিলিটি। এখানে চুরি হচ্ছে, এখানে অন্যায় হচ্ছে, এখন খারাপ হচ্ছে এটা বলার অধিকার আমার থাকবে। দেখার অধিকার থাকবে।সেই জন্য আজকে যদি পলিটিক্যাল অরগানাইজেশন স্ট্রং না করা হয়— ভিলেজ লেভেল থেকে আরম্ভ করে শেষ পর্যন্ত যাকে ওয়াচ ডগ বলা হয়, তা যদি না থাকে, তাহলে দেশের মঙ্গল করা যায় না, শুধু সরকারি কর্মচারীর ওপর নির্ভর করে। দেয়ার মাস্ট বি এ ব্যালেন্স দেয়ার মাস্ট বি পিপলস মবিলাইজেশন। আমাদের হোল ক্যান্ট্রিকে মবিলাইজ করতে হবে ফর ডেফিনিট পারপাস। দেখুন বাংলাদেশের কৃষকও পিছিয়ে নাই। আমি সার দিতে পারি নাই। যা সার দিয়েছি তার থার্টি পারসেন্ট চুরি হয়ে গেছে। স্বীকার করেন? আমি স্বীকার করি। আমি মিথ্যা কথা বলতে পারব না। মিথ্যা বলে একদিনও হারাম এদেশের প্রেসিডেন্ট থাকব না। আমার যে সার আমি দিয়েছি, তার কমপক্ষে থার্টি পারসেন্ট ব্ল্যাক মার্কেটিং-এ চুরি হয়ে গেছে। আমি যে ফুড দিই, তার কুড়ি পারসেন্ট চুরি হয়ে যায়। আমি যে মাল পাঠাই গ্রামে গ্রামে, তার ২০%/২৫% চুরি হয়ে যায়। সব চুরি হয়ে যায়। হুইট— আমি তো হুইট পয়দা করি না, খুব কমই করি, তবু কোনো বাজারে হুইট পাওয়া যায় না? গভর্নমেন্ট গোডাউনের হুইট। সার তো আমি ওপেন মার্কেটে বিক্রি করি না, তবু কোনো বাজারে সার পাওয়া যায় না? লেট আস ডিসকাস দিস ম্যাটার । দেয়ার শ্যাল বি এ ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ডিসকাশন ।
আমাদের একটি জিনিস মনে রাখা দরকার। যে লোক হাসতে হাসতে জীবনের মায়া কাটিয়ে ফাঁসি পর্যন্ত যেতে পারে, যে জানে, গুলি হয়ে এক ঘণ্টা পর মারা যেতে পারে, সেই মানুষ ক্ষমতার জন্য মিথ্যা কথা বলবে না। এটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। এইগুলি কী করে আপনারা করবেন? এই এগ্রিকালচার আমার নয়, চুরি হয় হোক। এই ফুড আমার নয়, চুরি হয় হোক। এটা আমার নয়- চুরি হচ্ছে হোক। এসব চলতে পারে না ৷ নেশন মাস্ট বি ইউনাইটেড এগেইনস্ট করাপশন। পাবলিক ওপিনিয়ান মবিলাইজ না করলে শুধু আইন দিয়ে করাপশন বন্ধ করা যাবে না। এবং সেই সঙ্গে সিস্টেমই পরিবর্তন করতে হবে। ঘুণে ধরা সিস্টেম দিয়ে করাপশন বন্ধ করা যায় না। এই সিস্টেমই হলো করাপশন-এর পয়দা। এই সিস্টেম করাপশন পয়দা করে এবং করাপশন চলে।
গ্রাম সমবায়
সেই জন্য আমার দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক ভেঙে ফেলে সব নতুন করে গড়তে হবে। নিউ সিস্টেম করতে হবে। সেই জন্য আমি কো-অপারেশনে গিয়েছি। আমি জাম্প করতে চাই না। আমি জাম্প করবার মানুষ নই। আমি স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখি ১৯৪৭-৪৮ সালে। কিন্তু আমি ২৭ বছর পর্যন্ত স্টেপ বাই স্টেপ মুভ করেছি। আমি জানি, এদের সঙ্গে মানুষ থাকতে পারে না। আমি ইম্পেঅশেন্ট হই না। আমি অ্যাডভেঞ্চারিস্ট নই। আমি খোদাকে হাজের-নাজের জেনে কাজ করি। চুপি চুপি, আস্তে আস্তে মুভ করি। সব কিছু নিয়ে। সেই জন্য আমি বলে দিয়েছি, ৬০টা থেকে ৭৫ কি ১০০টা কো-অপারেটিভ করব। এই কো-অপারেটিভ-এ যদি দরকার হয় সেন্ট্রাল কমিটির এক একজন মেম্বর এক একটার চার্জে থাকবেন। লেট আস স্টার্ট আওয়ার লেলভস। ১১৫ জন সেন্ট্রাল কমিটির মেম্বার আছে। এর মধ্যে ১০০ কি ৭০ জনকে এক একটা কো-অপারেটিভ-এর চার্জ দিয়ে দেব সুপারভাইজিং অফিসার করে। লেট আস স্টার্স ওয়াপ ইউ আর সাকসেস ফুল এবাউট দিস মালটিপারপাস সোসাইটি দেশের মানুষকে একতাবদ্ধ করা যাবে।
বদমায়েশ এক দল লোক, জমি সব শেখ সাহেব নিয়ে যাবে বলে তারা প্রপাগান্ডা করে জমি নেব না। তোমরা চেষ্টা করবে, এক সঙ্গে ফসল উৎপাদন করবে, তোমার শেয়ার তুমি নেবে। কিন্তু তবুও এগেইনস্টে প্রপাগান্ডা করে। জমি নেব না, জমি থাকবে। কিন্তু জমির একটা লিমিট আছে তোমাদের রাখার আইন হয়েছে, ১০০ বিঘার বেশি রাখতে পারবে না। সেটা আমরা ফলো করার চেষ্টা করব। এবং আস্তে আস্তে যদি ফ্লাড বন্ধ করতে পারি, সেচের ব্যবস্থা করতে পারি, ফার্টিলাইজার দিতে পারি, নিশ্চয়ই আমরা চিন্তা করব, আরও কত দূর কী করতে পারি। কেননা, আমার দেশের জমির মধ্যে পার্থক্য আছে। এখন আমি যদি সুনামগঞ্জের জমি যেখানে তিন বৎসর বন্যা হয় এক বৎসর ফসল হয়, নর্থ বেঙ্গলের জমি আর বরিশালের জমি, চিটাগাং হিলট্রাক্টস-এর জমি আর অন্য সব জমি এক পর্যায়ে দেখতে চাই তাহলে অসুবিধা হবে। আমার স্টাডির প্রয়োজন আছে, কোন জায়গায় কত পরিমাণ ফসল হতে পারে।আজকে কো-অপারেটিভ যদি আমরা করতে পারি, সেখানে যদি ফার্টিলাইজার দিতে পারি, রেশন কার্ড দিতে পারি তাহলে চুরিটা কম হবে। সেখানে যদি ওয়ার্কস প্রোগ্রামের টাকা দিতে পারি, চুরিটা কম হবে। একটা সিস্টেমের মধ্যে আসতে পারি। চিৎকার করে গালাগালি করে কাজ হবে না।
বাকশালের সদস্যপদ
এই যে পলিটিক্যাল পার্টি– এটা খুব ইমপরট্যান্ট জিনিস। এর মেম্বরশিপ ইচ্ছা করলেই পাওয়া যাবে না। মেম্বার বেছে বেছে নিতে হবে। গলায় সাইনবোর্ড লাগিয়ে বলবে, আমি মেম্বার, আমাকে একটা পারমিট দাও, সেটা হবে না। মেম্বার যে হবে তার একটা কার্ড থাকবে। প্রাইমারি মেম্বার থাকবে অনেক। এছাড়া আমি আপনাদের বর্তমান মেম্বার করে নিয়েছি। আপনাদের জন্য কৃষক, লেবার অরগানাইজেশন হচ্ছে। লেবার পলিসি করতে হবে, প্লান করতে হবে। কোনো ঢাক ঢাক গুড় গুড় থাকবে না। এই আমার আছে এই তোমার ডেভেলপমেন্ট, এই ইনকাম করতে পারলে এই তোমরা পাবে। দিতে চাই আমি তোমাদের লাভের জন্য ওদেরও দিতে হবে। তোমরা মানুষের মতো বাস করবে। তাদের দিতে হবে, যাতে কৃষক কৃষকের মতো বাস করতে পারে। ছাত্র লেখাপড়া করবে নতুন সিস্টেমে। আমরা একটা নতুন এডুকেশন সিস্টেম করতে বলেছি। কেরানী পয়দা করে লাভ হবে না। মানুষ পয়দা করতে হবে। নতুন এডুকেশন সিস্টেম করতে পারি কিনা, আমরা তা দেখেছি। দেশে সার্বিক অবস্থা ইমপ্রুভ করতে সময় লাগবে। তিন বছর, সাড়ে তিন বছর একটা দেশের জীবনে কিছুই না। আমাদের ইকোনমিক কন্ডিশন ভালো নয়। আমাদের মাল বিদেশ থেকে বেশি আনতে হয়। কমিট করতে গেলে ফাইন্যান্স মিনিস্টার সাহেব আমার কলম ধরে বসেন। মহাবিপদ আমাকে নিয়ে। টাকা পাওয়া যাবে না।
অর্থনৈতিক অগ্রগতি
দেশের ট্যাক্স, জাতীয় আয় বাড়াতে পারলে দেশের আয়ও বাড়ে। ইনশাল্লাহ আমরা কতগুলো স্টেপ নিয়েছি, ইকোনমিক স্টেপ। তাতে আমরা এটুকু বলতে পারি যে, আমরা ভীষণ খারাপ অবস্থায় পড়েছিলাম গত বছর, ইনশাআল্লাহ অতখানি খারাপ অবস্থায় এ বছর নাই। আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আমি এখন এখানে বেশি কিছু বলতে চাই। না। ফাইন্যান্স মিনিস্টার এ মাসের ২৩ তারিখে পার্লামেন্ট বক্তৃতা করবেন। তিনি সেদিন বলবেন। তবে আমি এটুকু বলতে পারি আমাদের ইকোনমিক কন্ডিশন ইজ নট সো ব্যাড অ্যান্ড ইট উইল ইমপ্রুভ ডে বাই ডে। কারণ দেশের মানুষের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরে আসছে, তারা কাজ করছে, ফ্যাক্টরিতে কাজ হচ্ছে, কৃষক ভাইয়েরা সবাই কাজে অ্যাডভান্স করেছে, দেশের মানুষও এগিয়ে এসেছে। ইনশাআল্লাহ আই সি এ ব্রাইট ফিউচার অব মাই কান্ট্রি।
তবে, এখানে যে শোষণহীন সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কথা আমরা বলেছি, সে অর্থনীতি আমাদের, সে ব্যবস্থা আমাদের। কোন জায়গা থেকে হায়ার করে এনে, ইমপোর্ট করে এনে কোনো ‘ইজম’ চলে না। এদেশে কোনো দেশে চলে না। আমার মাটির সঙ্গে, আমার মানুষের সঙ্গে, আমার কালচারের সঙ্গে আমার ব্যাকগ্রাউন্ডের সঙ্গে, আমার ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত করেই আমার ইকোনমিক সিস্টেম গড়তে হবে। কারণ, আমার দেশে অনেক অসুবিধা আছে। কারণ, আমার মাটি কী, আমার পানি কত, আমার এখানে মানুষের কালচার কী? আমার ব্যাকগ্রাউন্ড কী, তা না জানলে হয় না। ফান্ডামেন্টালি আমরা একটা শোষণহীন সমাজ গড়তে চাই, আমরা একটা সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি করতে চাই। বাট দি সিস্টেম ইজ আওয়ার্স। উই ডু নট লাইক টু ইমপোর্ট ইট ফ্রম এনিহোয়ার ইন দি ওয়ার্ল্ড। এটা আমার মতো পার্টির মতো।
পারস্পরিক দোষারোপ ভালো নয়
আমরা কারো বিরুদ্ধে কোনো কিছু বলতে চাই না। আমাদের একটা ফ্যাশান হয়ে গেছে যে, এ ওর বিরুদ্ধে গালাগালি করে ও অন্য একজনের বিরুদ্ধে গালাগালি করে। বাংলাদেশের মাটিতে যেন একটা হটবেড অব ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্স হয়ে গেছে। এ ওরে গালাগালি করে, ও ওরে গালাগলি করে। আমার মাটিতে বসে গালাগালি দরকার কি বাবা? যার যার দেশে গিয়ে গালাগালি কর। একটা ডিপ্লোমেটিক ডেকোরাম আছে। এক দেশে দাঁড়িয়ে অন্য দেশের বিরুদ্ধে কথা বলা চলে না। আমার দেশে তোমার কী ভালো, সেটা বল।
আই বিলিভ ইন পজিটিভ অ্যাপ্রোচ নট এ নেগেটিভ অ্যাপ্রোচ। সেজন্য আমার পার্টিতে আপনারা যারা আছেন, আসুন, আমরা পজিটিভ অ্যাপ্রোচ নিই। আমি যখন খুব ইয়ং ছিলাম, আমার নেতা সোহরাওয়ার্দী সাহেবকে কেউ গালাগালি করলে আমি রাগ করে তাঁর কাছে যেতাম। তিনি হেসে বলতেন, থাক বলতে দাও। ওতে কী হবে? উনি আমাকে বলেছেন, থিংক ফর এ পজিটিভ অ্যাপ্রোচ দ্যান এ নেগেটিভ অ্যাপ্রোচ। আমার লাইফকে আমি ঐ দৃষ্টিতেই দেখেছি।
যখন আমি ৬ দফা দিলাম, আমার বিরুদ্ধে যখন বক্তৃতা আরম্ভ করল সকলে মিলে, আমি কিন্তু কারো বিরুদ্ধে কোনো কথা বললাম না। আমি চলে গেলাম দেশের মানুষের কাছে গিয়ে ৬ দফার প্রচার আরম্ভ করে দিলাম। আমি যখন পার্টি রিভাইভ করলাম, আমার বিরুদ্ধে বক্তৃতা হলো। কিন্তু আমরা চলে গেলাম পিপলের কাছে। পিপল আমাকে গ্রহণ করে নিল । কাউকে গালাগালি করে লাভ নাই।
আমি বিশ্বাস করি, ক্যাম্বোডিয়া, আই শুড রিকগনাইডজ ইট। আই ডোন্ট কেয়ার এনিবডি ইন দি ওয়ার্ল্ড হোয়েদার এনিবডি ইজ স্যাটিসফায়েড অর এনিবডি ইজ আনহ্যাপি অর এনিবডি ইজ হ্যাপি। আই ফিল দ্যাট দে আর ফাইটিং ফর দেয়ার ওন লিবার্টি। আই অ্যাম উইথ দেম। আই সাপোর্ট পিআরজি। আই গিভ দেম রিকগনিশন বিকজ আই অ্যাম এ সাফারার, আই অ্যাম এ সাফারার ফর জেনারেশন টু জেনারেশন ফর দিস বেঙ্গলি নেশন। যে যুদ্ধ করছে তার মাতৃভূমির জন্য, তাকে সমর্থন দেব। তাই বলে আমি অন্যকে গালাগালি করব না। এই জিনিসটি আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করব।
শোষণহীন সমাজ গঠনের পথ
আজকে আপনারা মনে রাখবেন যে, আমি আর্মি, নেভি, এয়ারফোর্স, সরকারি কর্মচারী, বেসরকারি কর্মচারী, পলিটিশিয়ান, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, ডক্টরস, ইঞ্জিনিয়ারস— যদ্দুর সম্ভবপর, এঁদের রাখার চেষ্টা করেছি।পলিটিশিয়ানদের মধ্যে অনেক এক্সপেরিয়েন্সড– আমার পুরানো বন্ধুরা আছেন যারা আগে আমাদের সঙ্গে ছিলেন। কিছুদিন ডিফারেন্ট পার্টি করেছেন। আগে আমরা এক জায়গাই ছিলাম। মধ্যে ভাগ হয়ে গেলাম এটা সব জায়গায় হয়। আবার আমরা এক হয়েছি। সেকেন্ড রেভল্যুশান ইজ নট দি এন্ড। সেকেন্ড রেভুল্যশান যে করেছি আমি, চারটা প্রোগ্রাম দিয়েছি, এটাই শেষ নয়। শেষ কথা নয়। এটা হলো স্টেপ। ডেভেলপমেন্ট, মোর প্রোডাকশন, ফাইট এগেইনস্ট করাপশন, ন্যাশনাল ইউনিটি অ্যান্ড ফ্যামিলি প্লানিং। এগুলো করলেই আমরা একটা শোষণহীন সমাজ ব্যবস্থা গড়তে পারব- যেখানে মানুষ সুখে স্বাচ্ছন্দ্যে, বাস করতে পারবে। এটাই হলো আমার সেকেন্ড রেভল্যুশনের মূল কথা, এ জন্যই আমি সেকেন্ড রেভল্যুশনের ডাক দিয়েছি।
আমি আজ অত্যস্ত খুশি হয়েছি, আমার বহু সহকর্মী- যাদের সঙ্গে আমি দুদিনে কাজ করেছি, বিপদের দিনে কাজ করেছি, ‘৪৭, ৪৮, ৪৯ সালে— তাঁরা আজকে এখানে এসেছেন। মাঝখানে এদিক ওদিক ছুটেটুটে গিয়েছিলাম অনেকে। ডিফারেন্স অব ওপিনিয়ন এর জন্য। আজকে আবার আমরা এক হয়েছি, সরকারি কর্মচারীরা এক হয়েছি। আজকে সকলে মিলে যার যা কর্তব্য আছে করুন। সেই সঙ্গে করাপশন-এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। সারা বাংলাদেশের টুয়েন্টি থেকে থার্টি পার্সেন্ট দুঃখ দূর হয়ে যাবে, যদি করাপশন বন্ধ করতে পারি। থার্টি পারসেন্ট দুঃখ দূর হয়ে যাবে মানুষের। এ জন্য লেট আস টেক ওথ টুডে। যে নিজেরা আমরা করাপ্ট প্র্যাকটিস করি, তাই আবার অন্য কেউ করলে আমরা সহ্য করি না। উই ম্যাস্ট মবিলাইজ দি পিপল এগনেইস্ট করাপশন। এটা যদি করতে পারি দেখবেন, অনেক প্রবলেম আমারা সল্ভ করতে পারব। এ জন্যই আজকে আমাদের মবিলাইজ করতে হবে পিপলকে। আমাদের সোস্যালি বয়কট করতে হবে— যে লোকটা ঘুষ খায়, তাকে। সোস্যালি বয়কট করতে হবে— যে লোকটার মাইনে হাজার টাকা, কিন্তু ব্যয় করে পাঁচ হাজার টাকা, তাকে। যে লোকটার ইনকাম তিন হাজার, কেমন করে সে ব্যয় করে পনেরো হাজার টাকা? এই জিনিসটা সমাজের কাছে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে এবং তাহলেই সমাজ তথা পিপলের আপনাদের ওপর আস্থা ফিরে আসবে।
আমি মাঝে মাঝে আল্লাহর কাছে বলি যে,— গেছি চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম থেকে গেছি সেখানে (বেতবুনিয়া) সে গ্রামের মধ্যে লক্ষ লক্ষ লোক দুইপাশে বসে আছেন, ওঁরা এসেছেন আমাকে দেখার জন্য— মনে মনে আমি বলি যে, আমি কী করেছি ওঁদের জন্য? আমার দুঃখ হয় স্টিল দে লাভ মি দুনিয়ার নিয়মই এই। ভালোবাসা পেতে হলে ভালোবাসতে হয়। এবং সে ভালোবাসা সিনসিয়ারলি হওয়ার দরকার। তার মধ্যে যেন কোনো খুঁত না থাকে। ইফ ইউ ক্যান লাভ সামবডি সিনসিয়ারলি, ইউ উইল গেট দি লাভ অব সামবডি। দেয়ার ইজ নো ডাউট অ্যাবাউট ইট। আমার জীবনে আমি দেখেছি, লাখ লাখ লোক দু’পাশ দিয়ে কী অবস্থার মধ্যে আমি তো কল্পনাও করতে পারি না। হোয়াই দে লাভ মি সো মাচ? আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করি, মবিলাইজ দি পিপল অ্যান্ড ডু গুড টু দি হিউম্যান বিইংস অব বাংলাদেশ। দিজ আনফরচুনেট পিপল হ্যাভ সাফার্ড লং জেনারেশন আফটার জেনারেশন । এদের মুখে হাসি ফোটাতে হবে, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে হবে, এদের খাবার দিতে হবে।
যদি আমরা একটা শোষণহীন সমাজ গড়তে পারি, যদি করাপশন বন্ধ করতে পারি, আমি বিশ্বাস করি, ইনশাল্লাহ বাংলার মাটিতে যা এখনও আছে, তাতে সাড়ে সাত কোটি লোক হলেও বাংলার মানুষ না খেয়ে মরতে পারে না। আই হ্যাভ সিন দ্যাট।
আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা চাই। কারণ, আই হ্যাভ বিকাম ইমোশনাল। আগস্ট মাসে আমি আপনাদের সভা ডাকছি উইথ ডেফিনিট এজেন্ডা। ফুড, এগ্রিকালচার, ইন্ডাস্ট্রি, এডুকেশন, কো-অপারেটিভ, সমস্ত প্রোগ্রাম দিয়ে তারপর আমি আপনাদের এই হাউজটাকে বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ করে দিচ্ছি। আপনারা ডিভাইড হয়ে যাবেন। সব কিছু ডিভাইড হয়ে গেলে তখন এই কমিটিতে বা গ্রুপে সেক্রেটারিয়েট থেকে লোক আসবে, গভর্নমেন্ট থেকে লোক আসবে, ডিপার্টমেন্ট থেকে আসবে, পলিটিক্যাল ওয়ার্কার আসবে, সমস্ত ফ্যাক্টস ফিগার নিয়ে। এই জায়গাতে কোথায় ডিফেক্ট হয়েছে, কোন জায়গাতে ইমপ্রুভ করতে পারি, সে সম্পর্কে আপনারা একটা সাজেশন দেবেন। তখন কেন্দ্রীয় কমিটি কার্যনির্বাহী কমিটির নিকট সুপারিশ পেশ করবে এবং কার্যকরী করতে অনুরোধ করবে। কমিটি সরকারকে এটা
আপনাদের অনেক কষ্ট দিলাম। বেয়াদবি মাফ করবেন। লেট আস ওয়ার্ক টুগেদার উই আর নাউ ওয়ান পার্টি পার্টি মানে কী, জানেন? এভরি পার্টি ওয়ার্কার অব মাইন ইস লাইক মাই ব্রাদার, ইজ লাইক মাই সন। আই ক্রিয়েটেড এ ফ্যামিলি হোয়েন আই অরগানাইজড আওয়ামী লীগ । বাংলাদেশে এমন কোনো জায়গা নাই, যেখানে আমি যাইনি। আর পলিটিক্যাল পার্টি মিনস এ ফ্যামিলি, যার মধ্যে আছে আইডিওলজিক্যাল এফিনিটি৷ সে জন্য এই পার্টিতে উই আর ওয়ান ফর সাম পার্টিকুলার পারপাসেস, হোয়্যারেভার উই আর। আমাদের আদর্শ হলো বাংলাদেশকে স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ইজ্জত সহকারে দুনিয়াতে বাঁচিয়ে রাখা, বাংলার দুঃখী মানুষকে পেট ভরে খাবার দিয়ে শোষণমুক্ত সমাজ গঠন করা, যেখানে অত্যাচার অবিচার জুলুম থাকবে না, দুর্নীতি থাকবে না। লেট আস অল ট্রাই ফর দ্যাট। আসুন, আমরা চেষ্টা করি সে সম্পর্কে সকলে মিলে।
আপনাদের অশেষ ধন্যবাদ ।
জয় বাংলা।